দীর্ঘ এক সপ্তাহ ধরে শিলিগুড়ি সিকিম ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ ছিল। বারবার ধস। পাহাড়ি রাস্তা তিস্তার গর্ভে চলে যাওয়া। এই বিপর্যয়ের কারণে জাতীয় সড়ক ধরে চলাচল বন্ধ ছিল। বিপাকে সাধারণ মানুষ থেকে পর্যটক ব্যবসায়ী সবাই। অবশেষে চলাচলের জন্য রাস্তা করা হল। তবে রাস্তা খুলতেই এখন দীর্ঘ গাড়ির লাইন পড়ে গিয়েছে। মেল্লি, তিস্তা বাজার থেকে শুরু করে এই অংশই সবচেয়ে বেশি যানজট। শিলিগুড়ি-সিকিম লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। ফলে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিমের বাসিন্দাদের। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কোথাও রাস্তা মেরামত হয়েছে। আবার কোথাও নতুন করে ধসে বিধ্বস্ত রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। তবে ধীরগতিতে, সব দিক নজর রেখে চালকদের গাড়ি চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে প্রশাসন। এই রাস্তা বন্ধ থাকায় পর্যটনে কয়েকশো কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে দাবি করা হয়েছে পর্যটন সংস্থার তরফে।
পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলছিল। দার্জিলিং, কালিম্পং থেকে সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় ধস নামতে শুরু করে। জাতীয় সড়কের একটা দিক বন্ধ করে যান চলাচল চলতে থাকে। মঙ্গলবার সকালে শিলিগুড়ি-সিকিম সড়ক যোগাযোগের 'লাইফ লাইন' ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের লিকুভিড়ে ফের ভূমিধস নামে। ২৯ মাইল। এছাড়া মিরিক-সহ একাধিক জায়গায় ধস নামতে দেখা যায়। রাস্তার একটা অংশ ভেঙে তিস্তার গর্ভে চলে গিয়েছিল। এনএইচআইডিসিএল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে। জানানো হয়, ১৫ আগস্ট খুলবে জাতীয় সড়ক। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে শুরু হয় রাস্তা তৈরির কাজ। ট্যুর অপারেটর সম্রাট সান্যাল বলেন, "সিকিম যাওয়ার প্রধান সড়ক এটি। এটা বন্ধ থাকায় পর্যটকরা সমস্যায় পড়ে। একটানা বন্ধ থাকায় বিশাল ক্ষতি হয়েছে। তাই আমরা আগাগোড়াই চাই এই জাতীয় সড়ক নিয়ে একটা দৃঢ় পদক্ষেপ নিক প্রশাসন।"
বাণিজ্যের কথা মাথায় রেখেই এই রাস্তা চালু করতে তৎপর হয় প্রশাসন। রাস্তা চালু হলেও পুরোপুরি স্বস্তি এখনও ফেরেনি বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। কারণ, রাস্তা চালু হলেও বেশ কিছু জায়গায় খুব খারাপ অবস্থা। তাই চালকদের ধীর গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফের ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ওই রাস্তা দিয়ে অতি সতর্কভাবে চলাচল করতে হবে। উপর থেকে বড় পাথর গড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও থাকছে। এবিষয়ে কালিম্পংয়ের জেলাশাসক টি বালাসুব্রহ্মণ বলেন, "সব রকম যানবাহন চলাচলের জন্য রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের নজর রয়েছে যাতে কোনও চালক দ্রুতগতিতে গাড়ি না চালায়।" এদিকে এই রাস্তা বন্ধ থাকায় প্রায় কয়েকশো কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন-সহ পর্যটন ব্যবসায়ীরা এবিষয়ে বেশ চিন্তিত।
এ জাতীয় আরো খবর..