ভেবেছেন ভুয়ো থানাও হয়। পুলিশ ধরার পরই সামনে এলো এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা। যেই থানার পুলিশ আধিকারিক থেকে সবাই ভুয়ো। ইতিমধ্যে ওই ভুয়ো থানার ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর তার পরই সবচেয়ে অবাক করার ঘটনা সামনে এসেছে।
নয়ডায় ওই ভুয়ো থানার পর্দাফাঁস কাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছে বীরভূমের প্রাক্তন তৃণমূল নেতা বিভাস অধিকারী, তাঁর ছেলে-সহ ৬ জন।
যেমনটা হয়। ঝাঁ চকচকে অফিসের সামনে 'ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অ্যান্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো' নামে ঝোলানো হয়েছে বোর্ড। আন্তর্জাতিক তদন্তকারী সংস্থার অফিসার হিসাবে পরিচয় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে সচিত্র ভুয়ো আইডি কার্ড!অভিযোগ রয়েছে, সেখানে বসেই কখনও পুলিশ অফিসার, কখনও আবার তদন্তসংস্থার আধিকারিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মানুষকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হতো! গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেই ভুয়ো তদন্ত সংস্থার পর্দাফাঁস করল নয়ডা পুলিশ।
এই ঘটনায় সেন্ট্রাল নয়ডার ডিসিপি শক্তি মোহন অবস্তি সাংবাদিকদের জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।ধৃতরা পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। কিন্তু কীভাবে এই পুলিশ বা আন্তর্জাতিক তদন্তকারী সংস্থার নাম করে চালাতো হতো প্রতারণাচক্র? নয়ডা পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, প্রাক্তন তৃণমূল নেতা বিভাস অধিকারীর তৈরি করা ভুয়ো থানায় নিরীহ ব্যক্তিদের নামে রুজু করা হতো মিথ্যে মামলা। এরপর তদন্তের নামে টার্গেটকে ডেকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হতো। পুলিশের আরও দাবি, রীতিমতো আটঘাঁট বেঁধে ভুয়ো থানা খুলে কাজ করছিল ওই জালিয়াত-চক্র। তদন্তে জানাগেছে, থানার নামে এরা গত ৪ জুন এখানে ঘর ভাড়া নেয়। দিন দশেক আগে বোর্ড লাগিয়ে নকল অফিস খোলে। কখনও পুলিশের ভুয়ো পরিচয় দিয়ে, আবার কখনও পুলিশের মতো সমান্তরাল ব্যবস্থার কথা বলে এরা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিল। ঘটনাস্থলে হানা দিয়ে প্রতারণা চক্রের মূল পান্ডা হিসাবে গ্রেফতার করা হয় বীরভূমের প্রাক্তন তৃণমূল নেতা বিভাস অধিকারীকে।একই অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাঁর ছেলে অর্ঘ্য অধিকারী-সহ আরও ৫ জনকে।তল্লাশি চালিয়ে ৯টি মোবাইল ফোন, প্রচুর ভুয়ো পরিচয়পত্র, জাল সরকারি লেটার হেড, নকল স্ট্যাম্প সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
এদিকে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম উঠে এসেছিল বীরভূমের এই প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি বিভাস অধিকারীর নাম। বীরভূমের নলহাটির ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি বিভাস অধিকারীর। তৎকালীন তৃণমূল নেতার বাড়ি, ফ্ল্য়াট এবং আশ্রমে ম্যারাথন তল্লাশি চালিয়েছিল সিবিআই. কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দাদের তদন্তের প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয় তাঁকে। পরে যদিও তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে 'সর্বভারতীয় আর্য মহাসভা' নামে একটি নতুন দল গঠন করেন বিভাস অধিকারী।এবার বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে গিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হল প্রাক্তন তৃণমূল নেতাকে।
'ইন্টারন্যাশনাল পুলিশ অ্যান্ড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো’ নামে অফিস খুলে দেদার জালিয়াতির পেছনে আর কে সঙ্গী ছিল বিভাসের? পুলিশের হাতে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য
এ জাতীয় আরো খবর..